


































১। স্বামী বাইরে থাকলে ভালো থাকে; কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করলেই দুজনের কোন একজনের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
নিচে উল্লেখিত লক্ষণগুলো যদি আপনার সাথে মিলে যায় তাহলে হয়তো আপনার সাথে থাকা জিনটি জাদুকর অথবা অন্য কোন জিন আপনাকে জাদু করে।
একটা বাচ্চার প্যারানরমাল প্রবলেম হয় তার বাবা-মার গাফিলতির কারণে। হয়ত বাবা-মা আমলদার নয়, হয়ত যতটুকু আমলদার হবার কথা ছিল ততটুকু নয়, হয়ত ছোট থেকেই হারাম কোন তাবিজ লাগিয়ে দিয়েছে গায়ে, হয়ত বদনজর, জিন, জাদু থেকে নিজেকে এবং বাচ্চাকে বাঁচাতে যা যা করা দরকার সেগুলো করে না। এসব কারণেও সন্তান আক্রান্ত হতে পারে।
[ক]
আল্লাহ তা'আলা শিরকের ব্যাপারে অনেক কঠোর। স্বাভাবিক! একজন মানুষই তো তার ভালোবাসা, তার প্রভাব প্রতিপত্তিতে অন্যের ভাগ বসানো পছন্দ করবে না, আর আল্লাহর সুবহানাহু তা'আলা তো রাজাধিরাজ। আমাদের কল্পনাও যার নাগাল পেতে অক্ষম, কিভাবে সেই রাব্বুল আলামিনের ব্যপারে অংশিদারিত্ব সহ্য করা যায়?
“নিশ্চয় শিরক বিরাট বড় জুলুম” [সুরা লুকমান:১২]
[খ]
শিরকের ক্ষেত্রে এজন্য আল্লাহ তা’আলার শাস্তি অনেক ভয়াবহ। “নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না। এছাড়া যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করে দেন।” [সুরা নিসা:১১৬]
আমরা জানি ঈসা আ.কে যখন মানুষেরা কিয়ামত দিবসে আল্লাহর নিকট সুপারিশের জন্য বলবে, তিনি চিন্তাগ্রস্ত থাকবেন। কারণ, মানুষ তার সাথে আল্লাহকে সাজদা করেছিল। মুর্তিপুজারিদের সাথে মুর্তিও জাহান্নামে পুড়ানো হবে মর্মে কোথাও পড়েছিলাম।
মোটকথা, আল্লাহ শিরকের ব্যাপারে কোন ছাড় দিবেন না।
[গ]
আমরা সেদিন একটি তাবিজের পোস্টমর্টেম দেখলাম, যেখানে সুরা ইখালাসের সাথে শিরক মিশিয়ে ভয়াবহতম শিরক করা হয়েছে। আচ্ছা সেসব কবিরাজ বা যাদুকররা “ইয়া জিবরাইল ইয়া মিকাইল” তাবিজ লেখে, তারাও তো শিরক করছে। তাইনা? ফিরিশতাদের সাথে শিরক। নিজে তো করছে, অন্যকেও শিরকি কালাম বিতরণ করছে!
মূলতঃ শয়তানকে সন্তষ্ট করার জন্য তাঁরা ফেরেশতাদের নাম নিয়ে আল্লাহর সাথে শিরক করে। কোন এক শয়তানি কবিরাজির বইয়ে সুরা ইখলাসের ওঁই শিরকি এডিশন লিখা ছিল, এরপর কিছু নিয়মকানুন বলা ছিল। এভাবে এভাবে এত হাজার বার লিখবেন পড়বেন এতদিন, এরপর “তিনজন মক্কেল আসবে আপনার খেদমতে!!!”
এই তিনজনের মধ্যে একজনের ব্যাপারে লিখেছে – সে বলবে আমার নাম আব্দুর রহমান, "সুরা ইখলাস পাঠ করিয়া আমাকে ডাকিলে" আমি হাজির হইব। আমি আপনাকে “বহুবিধ জ্ঞান ও আশ্চর্য বিদ্যা” শিক্ষা দিব। এরপর তাহারা সিজদা করিতে বলিলে আল্লাহর নামে সিজদা করিবে!
এবার আমি ব্যাখ্যা করি শোনেন – “সুরা ইখলাসের সাথে কয়েক হাজার বার জঘন্যভাবে শিরক মিশ্রিত করে বড় শয়তান সন্তুষ্ট করতে পারলে, সে তিনটা চামচা পাঠাবে। এই তিনজনের মধ্যে এক শয়তান এসে যাদু শিখাবে, আর এসব স্যাটানিক রিচ্যুয়াল পালন শেষে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, যখন শয়তানকে সিজদা করতে হবে।”
এই কবিরাজদেরকেই মানুষ বিরাট বুজুর্গ মনে করে, তাই না?
[ঘ]
দেখুন আমাদের প্রভু আল্লাহ তা'আলা কি বলছেন -
“যেদিন তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলবেন, এরা কি তোমাদেরই পূজা করত? ফেরেশতারা বলবে, আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পক্ষে, তাদের পক্ষে নই, বরং তারা জিনদের পূজা করত। তাদের অধিকাংশই শয়তানে বিশ্বাসী।” [সুরা সাবা:৪০-৪১]
গর্ভবতী মায়েদের সুরক্ষায় সহায়ক কিছু টিপস!
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে গর্ভবতী মায়েদের নিরাপত্তার জন্য কি কি করা যেতে পারে? বা গর্ভাবস্থায় রুকইয়াহ না করে বিভিন্ন খারাপ জিনিসের ক্ষতি থেকে কিভাবে বাঁচবো??
উত্তরঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। গর্ভাবস্থায় রুকইয়াহ না করতে চাইলে নিচের বিষয়গুলো এ সময় মেনে চলার চেষ্টা করবেন। যা আপনাকে ও আপনার সন্তানকে সকল খারাবি থেকে রক্ষার জন্য সহায়ক হবে ইংশাআল্লাহ
__________
*** ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরীকারী কোন জিনিশ যেমনঃ মূর্তি, মূর্তি জাতীয় শোপিস, পুতুল, প্রাণির উন্মুক্ত ছবি, নিজেদের টাঙ্গানো ছবি, কুকুর, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি থাকলে সেগুলা সরিয়ে ফেলবেন। গায়ে বা ঘরে তাবিজ বা যেকোন তাবিজ জাতীয় জিনিশ (যতবড় মাওলানা মুফতি সাহেবই দিক না কেন) থাকলে তা নষ্ট করে ফেলবেন। তাবিজ ব্যবহারের জন্য তাওবাহ করবেন। ভবিষ্যতে আর এদিকে পা বাড়াবেন না।
সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন। চেষ্টা করবেন আউয়াল ওয়াক্তে পড়ার। সম্ভব হলে নফল ইবাদাত করুন বেশি বেশি। চেষ্টা করুন তাহাজ্জুদ মিস না দেয়ার। সাথে সালাতুল হাজতও পড়ার চেষ্টা করুন।
বেশি বেশি যিকর করবেন। শুয়ে, বসে সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরনে মশগুল থাকুন। অন্তরে প্রশান্তি আসবে। কারণ আল্লাহ তা'আলা বলেন, “জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই দিলের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়”। (সূরা রাদ: ২৮)
গুনাহ থেকে বাঁচুন। বিশেষ করে মেয়েদের দ্বারা যে সহজ কিন্তু ভয়ংকর গুনাহগুলো সংঘটিত হয় সেগুলো থেকে বাঁচুন। একে অন্যের দোষচর্চা, সিরিয়ালপ্রীতি, পর্দা সম্পর্কে উদাসীনতা, অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
হারাম উপার্জন থেকে বাঁচবেন, বিশেষ করে সুদ থেকে।
বেশি বেশি ইস্তেগফার করুন, দরুদপাঠ করুন। এসময় যেহেতু শরীরে ক্লান্তি, অবসাদ চলে আসে সেটা দূর করতে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়বেন।
ওযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে ঘুমাতে যাবার আগে ওযু করে নিন।
সকাল সন্ধ্যা এবং ঘুমের আগের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন। বিশেষতঃ আয়াতুল কুরসি এবং তিন কুলের আমল মিস দিবেন না।
ফজর এবং আসরের পর অবশ্যই "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া'হদাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল 'হামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" এটা ১০০বার পড়া। কোনোদিন না পারলে অন্তত ১০ বার পড়বেন। ফজরের পরে সূরা ইয়াসীন এবং এশার পরে সূরা মূলক পড়বেন।
বেশি বেশি সাদাকাহ করবেন। সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারেন। নিয়মিত সাদাকাহ করবেন।
কুর'আন তিলাওয়াত করুন। কুর'আনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। এখন অনেকে বলেন কি সুরা পড়বো?? কুর'আন হাদীসে নির্দিষ্ট সুরার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এমনিতেই খতমের নিয়াতেও কুর'আন পড়তে পারেন, এই লম্বা সময়ে চেষ্টা করলে অনেকবার খতম দেয়া সম্ভব।
এ সময় সবর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মাকে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে সবর করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া বেশি বেশি দু'আ করুন। মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন, পজিটিভ থাকুন। নিজের সমস্যার কথা পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।। আবারো বলছি মাসনুন আমলগুলো বাদ দিবেন না। যদি ভুলে যান যখনই মনে পড়বে সাথে সাথে পড়ে নিবেন।। আর যদি কোন সময় সমস্যা বুঝতে পারেন, তাহলে তখন তিনকুল পড়ে শরীর মুছে নিবেন। সূরা বাক্বারাহ কে শরীরের পোশাকের মতোন সঙ্গী করে নিবেন। যারা জ্বিনের রোগী তারা ঘরে প্রতিদিন সূরা বাক্বারাহ তিলাওয়াত করবেন এবং সূরা সফফাত এর ১ থেকে ১০ আয়াত পড়া পানি রেডি করে ছিটাবেন বাসার প্রতিটা জায়গায়।
এগুলো মেনে চললে নানা রকম বালা মুসিবত থেকে রক্ষা পাবেন আর রব্বুল আ'লামীনের নৈকট্যও অর্জনেও সহায়ক হবে।
__________
আর সবশেষে বললেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হল, দু’আ। অবশ্যই অবশ্যই দু’আ করবেন, নিজের জন্য, সন্তানের জন্য অন্তর থেকে সবটুকু মমতা ঢেলে দিয়ে মন খুলে দু’আ করবেন। যা চান, যেমন চান সব আল্লাহর কাছে বলবেন। আমরা প্রায় সময়েই দু’আ-কে হেলাফেলা মনে করি, এটা দুঃখজনক। এমনটা করবো না। মু’মিনের সবচেয়ে পাওয়ারফুল অস্ত্র হচ্ছে দু’আ। দু’আর বরকতে আল্লাহ কত অসম্ভবকেও সম্ভব করে দেন! সুবহানাল্লাহ!
আল্লাহ আমাদের বুঝার এবং মানার তাওফিক দিন এবং সকল গর্ভবতী মায়েদের তাঁর নিরাপত্তার চাদরে জড়িয়ে নিন। আমিন!
সকাল-সন্ধ্যার আমল সমুহঃ ১. আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব। أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ ...